1. admin@dainikbanglarkotha.com : banglarkotha1987 :
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
বিজয় ধ্বনি যুব সংঘের উদ্যোগে জনগণের মাঝে শরবত বিতরণ আড়াইহাজারে গাজাসহ ২ জন গ্রেফতার সোনারগাঁয়ে একটি গ্রামে অন্য দেশের সাথে মিলে রেখে ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন সোনারগাঁও উপজেলা শাখা আরজেএফে এর উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার অনুষ্ঠিত সোনারগাঁয়ে বিজয় ধ্বনি যুব সংঘের উদ্যোগে অসহায় দরিদ্র পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ সোনারগাঁয়ে মেঘনা টোল প্লাজায় ছয়টি ইটিসি বুথ উদ্বোধন সোনারগাঁয়ে মোগরাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ-২০০৩ এর উদ্যোগে দুটি মাদরাসা ও এতিমখানায় দোয়া ও ইফতার সোনারগাঁয়ে ”দৈনিক সমকালীন কাগজ” এবং ”জাগো সোনারগাঁও টুয়েন্টি ফোর ডটকম” এর সৌজন্যে দোয়া ও ইফতার আসন্ন ঈদে মুক্তি পাচ্ছে সাংবাদিক সূর্য আহমেদ মিঠুন পরিচালিত মিউজিক্যাল ফিল্ম আত্মহারা সোনারগাঁয়ে মোগরাপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল

পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চলাচল শুরু ১০ অক্টোবর

  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১০৮ বার পঠিত

 ১০ অক্টোবর, ২০২৩ইং পদ্মা সেতু রেল চলাচল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে মাওয়া হয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশনে গেছে প্রথম ট্রেন। প্রায় ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথ পাড়ি দিতে ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট সময় লেগেছে পরীক্ষামূলক ট্রেনটির। ফলে দীর্ঘ দিনের প্রতিক্ষার অবসান হয়ে নতুন দিগন্তের সুচনা হয়েছে।
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৭ মিনিটে ট্রেনটি ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ছাড়ে। ট্রেনটি কেরানীগঞ্জ এলিভেটেড রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায় সকাল ১০টা ৪৮ মিনিটে, নিমতলা স্টেশনে বেলা ১১টা ১ মিনিটে, শ্রীনগর স্টেশনে বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে, মাওয়া স্টেশনে বেলা ১১টা ২৪ মিনিটে পৌঁছায়। সেখান থেকে বেলা ১১টা ২৭ মিনিটে পদ্মা সেতুতে উঠে, ৭ মিনিট পর বেলা ১১টা ৩৪ মিনিটে ট্রেনটি সেতু থেকে নামে। এরপর ভাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছায় দুপুর ১২টা ১৭ মিনিটে।
পরীক্ষামূলক যাত্রার প্রথম এই ট্রেনটি চালিয়েছেন লোকোমাস্টার হিসেবে এনামুল হক এবং সহকারী লোকোমাস্টার হিসেবে এম এ হোসেন। আর গার্ড হিসেবে ট্রেন পরিচালনা করেছেন আনোয়ার হোসেন। পরীক্ষামূলক ট্রেনের যাত্রী হিসেবে পর্যবেক্ষণ করেছেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, রেলপথ সচিব ড. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন, রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং রেলওয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প আগামী ১০ অক্টোবর উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী তারিখ দিয়েছেন। এই রেললাইন উদ্বোধনের ফলে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী পরিবর্তন হবে। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ জীবনযাত্রা সহজ হবে।
প্রকল্প কার্যালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে ভাঙ্গা অংশে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের গড় অগ্রগতি ৮৮.৫ শতাংশ। এর মধ্যে ঢাকা-মাওয়া অংশে কাজের অগ্রগতি ৮০.৫০ শতাংশ। এই অগ্রগতির মধ্যে ২৬.৪০ কিলোমিটার এমব্যাংকমেন্টের কাজ ১০০ শতাংশ, ৩০.০২ কিলোমিটার প্রিপেয়ার্ড সাবগ্রেডের কাজ ৯৬.৯৩ শতাংশ, ৩০.০২ কিলোমিটার সাব ব্যালাস্টের কাজ ৯৬.৩৮ শতাংশ, ১৫টি মেজর ব্রিজের কাজ ৮৬.৬৭ শতাংশ, ৩৫টি কালভার্ট/আন্ডারপাসের কাজ ৯৪.২৯ শতাংশ, ৩ হাজার ৮১৭টি ওয়ার্কিং পাইলের কাজ ১০০ শতাংশ, ৬ হাজার ১২১টি প্রিকাস্ট বক্সগার্ডার সেগমেন্টের (কেরানীগঞ্জ স্টেশনসহ) কাজ ১০০ শতাংশ, ৫৩০টি ভায়াডাক্ট-১ এর পিয়ার ও অ্যাব্যাটমেন্টের (কেরানীগঞ্জ স্টেশনসহ) কাজ ১০০ শতাংশ, ২০.৪৬ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট-১ এর ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক ¯øাবের কাজ ৯৪.০৪ শতাংশ, ৫২৬টি ভায়াডাক্ট-১ এর স্প্যান স্থাপনের (কেরানীগঞ্জ স্টেশনসহ) কাজ ১০০ শতাংশ, ২০.৪৬ কিলোমিটারের ভায়াডাক্ট-১ এর ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক এর কাজ ৯৪.০৪ শতাংশ, ৪টি স্টেশন ভবন নতুন নির্মাণ ও বিদ্যমান স্টেশন ভবন পুনর্নিমাণের কাজ ৪৮ শতাংশ, নতুন স্টেশনে সিগনালিং ইকুইপমেন্ট স্থাপনের কাজ ২০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
মাওয়া-ভাঙ্গা অগ্রাধিকার অংশের কাজের অগ্রগতি ৯৬.৫০ শতাংশ। এই অংশে এমব্যাংকমেন্ট ২৬.৩৫ কিলোমিটার, প্রিপেয়ার্ড সাবগ্রেড ২৪.৫৫ কিলোমিটার, সাব ব্যালাস্ট ২৭.১৫ কিলোমিটার, মেজর ব্রিজ ১৩টি, কালভার্ট/আন্ডারপাস ৬৯টি, ওয়ার্কিং পাইল এক হাজার ৭১৩টি, প্রিকাস্ট বক্সগার্ডার সেগমেন্ট ২ হাজার ৫৮টি, ভায়াডাক্ট-২ এর পিয়ার ও অ্যাব্যাটমেন্ট ৬৮টি, ভায়াডাক্ট-২ এর ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক এর ২.৫৮ কিলোমিটার, ভায়াডাক্ট-২ এর স্প্যান স্থাপন ৬৭টি, ভায়াডাক্ট-৩ এর পিয়ার ও অ্যাব্যাটমেন্ট ১০৮টি, ভায়াডাক্ট-৩ এর ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক এর ৪.০৩ কিলোমিটার, ভায়াডাক্ট-২ এর স্প্যান স্থাপন ১০৭টি, পদ্মা সেতু ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক এর ৬.৬৮ কিলোমিটারের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। এছাড়া ৪৩.৯২ কিলোমিটার ব্যালাস্টেড ট্র্যাকের কাজ শেষ হয়েছে ৯২.৭৩ শতাংশ, ৪টি স্টেশন ভবন নতুন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে ৮০ শতাংশ এবং স্টেশনগুলোতে সিগনালিং ইকুইপমেন্ট স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে ৬২ শতাংশ।
ভাঙ্গা-যশোর অংশে কাজের অগ্রগতি ৭৮ শতাংশ। এর মধ্যে ৮৩.১৬ কিলোমিটার এম ব্যাংকমেন্টের কাজ ৯৮.৯৮ শতাংশ, ৮৩.১৬ কিলোমিটার প্রিপেয়ার্ড সাবগ্রেডের কাজ ৮৮.২৭ শতাংশ, ৮৩.১৬ কিলোমিটার সাব ব্যালাস্টের কাজ ৭৪.০৯ শতাংশ, ৩২টি মেজর ব্রিজের কাজ ৯৬.৮৮ শতাংশ, ১৬৮টি কালভার্ট/আন্ডারপাসের কাজ ১০০ শতাংশ, ১ হাজার ২৬৮টি ওয়ার্কিং পাইলের কাজ ১০০ শতাংশ, ৯টি স্টেশন ভবন নতুন নির্মাণ ও বিদ্যমান স্টেশন ভবন পুনর্নিমাণের কাজ ৩৭ শতাংশ, ১১০.৭৩ কিলোমিটার ব্যালাস্টেড ট্র্যাকের কাজ ১৩.৬২ শতাংশ শেষ হয়েছে।
ঢাকা-যশোর অংশে কাজের অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। এর মধ্যে ১৩৫.৯২ কিলোমিটার এমব্যাংকমেন্টের কাজ ৯৯.৩৮ শতাংশ, ১৩৭.৭৪ কিলোমিটার প্রিপেয়ার্ড সাবগ্রেডের কাজ ৯২.২৫ শতাংশ, ১৪০.৩৪ কিলোমিটার সাব ব্যালাস্টের কাজ ৮৩.৮৭ শতাংশ, ৬০টি মেজর ব্রিজের কাজ ৯৫ শতাংশ, ২৭২টি কালভার্ট/আন্ডারপাসের কাজ ৯৯.২৬ শতাংশ, ৬ হাজার ৭৯৪টি ওয়ার্কিং পাইলের কাজ ১০০ শতাংশ, ৮ হাজার ১৭৯টি প্রিকাস্ট বক্সগার্ডার সেগমেন্টের (কেরানীগঞ্জ স্টেশনসহ) কাজ ১০০ শতাংশ, ৭০৬টি ভায়াডাক্ট পিয়ারের কাজ ১০০ শতাংশ, ৭০০টি ভায়াডাক্টের স্প্যান স্থাপনের কাজ ১০০ শতাংশ, ৩৩.৭৭ কিলোমিটার ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক এর কাজ ৯৬.৩৯ শতাংশ, ১৯৩.১৮ কিলোমিটার ব্যালাস্টলেস ট্র্যাকের কাজ ৪৪.৩৫ শতাংশ, ১৭টি স্টেশন ভবন নতুন নির্মাণ ও বিদ্যমান স্টেশন ভবন পুনর্নিমাণের কাজ ৬৩ শতাংশ, নতুন স্টেশনগুলোর সিগনালিং ইকুইপমেন্ট স্থাপনের কাজ ৪৯ শতাংশ শেষ হয়েছে।
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, অল্প সময়ের মধ্যেই এ রুটে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল করবে, আর আগামী বছরের জুন মাসেই যশোর পর্যন্ত এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এর মাধ্যমে মোংলা পোর্টকে পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করা যাবে। এতে সময় ও পরিবহণ খরচ কমে আসবে। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে এবং ঢাকা থেকে খুলনার যে দূরত্ব তা অনেক কমে আসবে।
তিনি বলেন, ঢাকা থেকে যশোর ১৭২ কিলোমিটারের রেললাইনের মধ্যে আজ ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রায়াল রান করলাম। এ সময় রেলের ডিজি, সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্টদের যারা এই প্রকল্পের জন্য নিরলস কাজ করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি। আগামী ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন বলে জানানো হয়।
মন্ত্রী আরও বলেন, রেল যোগাযোগের ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। কলকাতার সঙ্গে যারা ব্যবসা বাণিজ্য করে তাদেরকে আর বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে মালামাল পরিবহণ করতে হবে না। ঢাকা-যশোর রেলপথ পুরোপুরি চালু হলে ঢাকা থেকে সরাসরি এ পথ ব্যবহার করা যাবে।
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, এর আগের কোনো সরকার রেল নিয়ে কাজ করে নাই। প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে ২০১১ সালে রেল মন্ত্রণালয় গঠন করে রেলের উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। রেল নিয়ে আমাদের যে পরিকল্পনা মোটা দাগে, আমরা সমগ্র জেলায় রেল সংযোগ পৌঁছে দেব।
এর আগে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সকাল ১০টা ৭ মিনিটে পরীক্ষামূলক ট্রেনটি পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা রেলস্টেশনের পথে রওনা হয়। বেলা ১১ টা ২৬ মিনিট ট্রেনটি পদ্মা সেতুতে ওঠে। সোয়া ৬ কিলোমিটার সেতু পাড়ি দিতে ৭ মিনিট সময় লেগেছে পরীক্ষামূলক ট্রেনটির। পরীক্ষামূলক ট্রেনটির ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার পৌঁছাতে ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট সময় লেগেছে। যাত্রী পরিবহণ শুরু হলে আরও কম সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা রেল চলাচল আগামী ১০ অক্টোবর শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরও খবর
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দৈনিক বাংলার কথা
Theme Customized By Shakil IT Park