।বাংলার কথা ডেস্ক:-
গতকাল ০৭ অক্টোবর, ২০২৩ ইং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে আহত ব্যাবসায়ী দুলাল মিয়ার মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। তিনি উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের হাবিবপুর গ্রামের মরহুম শাহজাহান ওরফে ডেঙ্গর আলীর ছেলে।
জানা গেছে,গত মঙ্গলবার ৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে দশটার দিকে একই ইউনিয়নের বাড়ি মজলিশ গ্রামের মৃত মজিদ প্রধানের ছেলে মো: জামান প্রধান পরিকল্পিত ভাবে ফোনে তার পাশের বাড়িতে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে হাবিবপুর গ্রামের ফজল মিয়ার সাথে জামান কাটাকাটি করে। এক পর্যায়ে জামান বাড়ি মজলিস এলাকার রাজ্জাককে বাসায় ডেকে আনে। রাজ্জাক এসে ফজল মিয়াকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও কিল ঘুষি মারতে থাকলে। খবর পেয়ে ফজল মিয়ার ছোট ভাই দুলাল ও ছেলে নির্ঝর ঘটনাস্থলে ছুটে এলে জামানের হুকুমে রাজ্জাক ও তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদেরকে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে আহত করে। ছুরির আঘাতে দুলালের পেটের নারিভুরি বেরিয়ে যায়।
তাদের ডাক চিৎকারে আসপাশের লোকজন এগিয়ে এলে রাজ্জাক ও তার লোকজন হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। নিহত দুলাল মিয়ার ভাতিজা ইয়াছিন হোসাইন নির্ঝর জানান, তার বাবার উপর হামলার খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যায় পরে রাজ্জাক ধারালো ছুরি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাবার উপর হামলা করে। নির্ঝর বাম হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে বাম হাতের কজ্বি কেঁটে রক্তাত্ব জখম হয়।
এছাড়া তার চাচা দুলালের পেটে ধারালো ছুরি দিয়ে পেটে উপর্যুপরি আঘাত করে। এলাকার লোকজন তাদের উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত ডাক্তার দুলাল মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরন করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার চাচা আহত দুলাল মিয়া শনিবার ভোরে মারা যান। দুলাল মিয়ার মৃত্যুর খবরে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিকেল ৫ টায় নিজ এলাকার হাবিবুর ঈদগাহ মাঠে দুলাল মিয়ার জানাযা পড়ানো হয়।জানাযায় তার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এবং প্রশাসনের লোক উপস্থিত ছিল। উপস্থিত সকলের কাছে তার আত্মীয়-স্বজন প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন এবং খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে এ হামলার ঘটনায় গত বুধবার সকালে ইয়াছিন হোসাইন নির্ঝর বাদি হয়ে সোনারগাঁও থানায় রাজ্জাক, নাহিদ, মহসীন, ইমদাদ হোসেন, জামান, শামীম, সজিব, শাহ আলমসহ, আরো ১০-১৫জন অজ্ঞাতনামাকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সোনারগাঁও থানার এসআই মো. ইমরান হোসেন ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইমদাদ হোসেন (৫৫) ও আরমানকে (৪৩) গ্রেপ্তার করেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে। যেহেতু আহত ভিকটিমের মৃত্যু হয়েছে সেহেতু এ মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হবে।