আজ রবিবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৫:০৮ অপরাহ্
তাসলিমা আকতার রেখা ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন খামারে চলছে গরু মোটাতাজাকরণ। খৈল, ভূষি, ঘাস, খড়, বন, লালিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে। খামারিরা জানান, গতবারও অতিমারী করোনার কারণে তাদের ব্যবসা ভালো যায়নি। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবারও তারা খামারগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক কোরবানির পশু রেখেছেন। তবে আকস্মিকভাবে লকডাউন দেওয়ায় তাদের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ। এদিকে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারতীয় গরু প্রবেশ করলে পশুর ন্যায্য মূল্য থেকে তারা বঞ্চিত হবেন বলেও জানিয়েছেন। সারা বছর লাভের আশায় খামারে কাজ করলেও সঠিক সময়ে কোরবানির পশু বিক্রি করতে না পারলে অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন খামারিরা। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, চাহিদার তুলনায় কোরবানি যোগ্য অতিরিক্ত পশু মজুদ রয়েছে জেলায়। তালিকাভুক্ত ১২ হাজার ৩৭০টি খামার ছাড়াও অনেকেই পারিবারিকভাবেও কোরবানির পশু পালন করছেন। শেষ পর্যন্ত করোনার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলে হাট বাজারের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসতে পারে। খামারগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি খামারের শ্রমিকরা পশুগুলোর পরিচর্যায় ব্যস্ত। কেউ গরুকে গোসল করাচ্ছেন, কেউ আবার খাওয়াচ্ছেন, কেউ বা পরিচ্ছন্ন করছেন। কথা হয় এগ্রো ফার্মের শ্রমিক আলামিনের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের খামারে তিনশ’র মত বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। সবনিম্ন দেড় লাখ থেকে ছয় লাখ টাকারও গরু রয়েছে। তবে এবার দুশ্চিন্তায় আছি, লকডাউন তাই গরুর হাট নাও বসতে পারে। এসব গরু যথাসময়ে বিক্রি না করতে না পারলে মালিককে লোকসান গুণতে হবে।সাগর নামে আরেকজন শ্রমিক বলেন, ভালো দামের আশায় কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরুর পরিচর্যা আমাদের একটু বেশি করতে হচ্ছে। হাট না বসলে অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। খামার মালিক মো. নাসির মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমার খামারে গরুর পরিচর্যা করা হচ্ছে। মোটাতাজা করতে কোনো প্রকার ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। তবে এবার বাজারজাত নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছি। লকডাউনে গরুর হাট না বসলে আর্থিক সংকটে পড়ে যাব।সোনালি ফার্মের খামার মালিক জুয়েল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, গতবারও করোনার কারণে আমাদের ব্যবসা ভালো যায়নি। এবারও লকডাউন থাকায় কোরবানির পশুর ন্যায্য মূল্য পাব কিনা, শঙ্কায় আছি। বেশ কয়েকজন খামার মালিক বাংলানিউজকে বলেন, অনলাইনে গরু বেচাকোনার পাশাপাশি খোলা বাজারে বিক্রি করতে পারলেও ভালো হতো। সহজে আমাদের ক্ষতিগুলো পুষিয়ে নিতে পারতাম। জেলা প্রাণিসম্পদ সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ বি এম সাইফুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, অনলাইনে পশু কেনাবেচার জন্য প্রতিটি উপজেলায় ফেসবুক পেইজ খোলা হয়েছে। এতে খামারিদের যাবতীয় পশুর তথ্য আপলোড করা হচ্ছে। অনলাইনে পছন্দের পর ক্রেতারা ইচ্ছা করলে খামারে এসে দেখে শুনে তার কোরবানির পছন্দের পশুটি কিনতে পারবেন। এছাড়া কোরবানির পশু নিয়ে খামারিদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই বলেও তিনি জানান।